সৌদি আরবে যারা ভিজিট ভিসায় এসে সময় মতো ভিসার মেয়াদ বাড়ান না, তাদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি জারি করেছে দেশটির সরকার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময় অবস্থান করলে ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা এবং ছয় মাসের জেল হতে পারে।
সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে একটি ভিডিওতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ভিডিওটিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যারা ভিজিট ভিসায় তাদের আত্মীয়-স্বজনকে সৌদি আরবে নিয়ে আসেন এবং পরবর্তীতে তারা ভিসার মেয়াদ না বাড়িয়ে অবৈধভাবে বসবাস করতে থাকেন, তাদের বিরুদ্ধেই এই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগে এই ধরনের ক্ষেত্রে ১৫ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হতো। তবে, অনিয়ম বন্ধ করার জন্যই জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে এবং এর সাথে জেল জরিমানার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে।
যারা ফ্যামিলি ভিজিট ভিসায় তাদের পরিবারের সদস্যদের এনেছেন, তাদের অবশ্যই ভিসার মেয়াদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্পন্সরকেই এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কেউ থেকে যান, তবে স্পন্সরসহ অবৈধভাবে অবস্থানকারী ব্যক্তিকে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে এবং জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে হতে পারে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সৌদি আরবে প্রবেশের পর ৯০ দিন পর্যন্ত ভিজিট ভিসার মেয়াদ থাকে। সাধারণত, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস ২৩ দিন আগে থেকেই যাওয়াজাত (পাসপোর্ট অধিদপ্তর) থেকে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মেসেজ পাঠানো হয়।
প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার স্বল্প খরচে ঘরে বসেই ভিসার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব। তবে, তৃতীয়বার অর্থাৎ নয় মাস পার হওয়ার পর আর মেয়াদ বাড়ানো যায় না।
এই প্রসঙ্গে ভিজিট ভিসায় আগত এবং স্পন্সরদের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখার কথা বলা হয়েছে:
- ভিসার মেয়াদ কোনোভাবেই শেষ করা যাবে না। মেয়াদ শেষ হলে জরিমানা এবং মেয়াদ বাড়াতে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হতে পারে।
- যদি কোনো কারণে ভিসার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব না হয়, তবে পরিবারের সদস্যদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে হবে। এতে স্পন্সরের আকামার (residence permit) উপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
- সবাইকে নিয়মিতভাবে তাদের আপশিট (Absher) অ্যাকাউন্ট চেক করতে হবে। কারণ, ভিসার মেয়াদ সংক্রান্ত মেসেজ এই অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ভিজিট ভিসায় এসে হজ করা অথবা কোনো ধরনের কাজ করা গুরুতর অপরাধ। তাই, এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এই নতুন নিয়মটি শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা ভিজিট ভিসায় তাদের পরিবারের সদস্যদের এনে ভিসার মেয়াদ বাড়ান না। কাজের ভিসার ক্ষেত্রে এই জরিমানা প্রযোজ্য নয় বলেও स्पष्ट করা হয়েছে।
সুতরাং, যারা ফ্যামিলি ভিজিট ভিসায় সৌদি আরবে অবস্থান করছেন, তাদের ভিসার মেয়াদের বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং সময় মতো তা নবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায়, বড় ধরনের আর্থিক জরিমানা এবং আইনি জটিলতায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।