বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। এই বৈঠকের অন্যতম প্রধান অর্জন হচ্ছে, ভারত নয় বরং চীনকেই তিস্তা নদী পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশের প্রধান অংশীদার হিসেবে নির্বাচন করা।
তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনার চীনা পরিকল্পনা
বাংলাদেশ সরকার নদীগুলোর কার্যকর ব্যবস্থাপনার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। বিশেষত, উত্তরবঙ্গের জন্য তিস্তা নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ জলসম্পদ। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি এবং শুষ্ক মৌসুমে পানির স্বল্পতা দুই-ই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই সমস্যা সমাধানে চীন তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াবে।
চীনের সাথে ৫০ বছরের মাস্টার প্ল্যান
ড. মুহাম্মদ ইউনুস তার সফরে চীনের কাছে ৫০ বছরের নদী ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য:
- তিস্তার পানির সঠিক সংরক্ষণ
- বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উন্নতকরণ
- কৃষি সম্প্রসারণে পানির সঠিক ব্যবহার
- পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা
২১ বিলিয়ন ডলারের অর্থসহায়তা
এই সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল চীনের পক্ষ থেকে ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থসহায়তার প্রতিশ্রুতি। এই অর্থ বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী ব্যবস্থাপনা এবং কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
তিস্তা মহাপরিকল্পনার ভবিষ্যৎ
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই সহায়তা তিস্তা মহাপরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সাহায্য করবে। যদি পরিকল্পনাটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এটি শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের এই সফরের চূড়ান্ত ফলাফল ও চীনের সাথে সমন্বয়ের মাত্রা সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত, এটি বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।